Search

Search

এক্সক্লুসিভ ব্রেকিং নিউজ পেতে আপনার মোবাইল নম্বরটি দিন

চিন্তা করবেন না, আমরা স্প্যাম করি না!

নীল জলরাশি আর প্রবালের গান: হৃদয়ে লেখা সেন্টমার্টিনের স্মৃতি

সেন্টমার্টিন—বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ। কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার উপকূল থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরের বুক চিরে দাঁড়িয়ে থাকা এই ছোট দ্বীপটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপার বিস্ময়। আমার বহুদিনের ইচ্ছা ছিল সেন্টমার্টিন যাওয়ার। অবশেষে গত শীতকালে সেই স্বপ্ন পূরণ হলো।

ভ্রমণ শুরু করি ঢাকা থেকে। রাতের বাসে কক্সবাজার হয়ে টেকনাফ পৌঁছাই। টেকনাফ থেকে সকালে জাহাজে চড়ে সেন্টমার্টিনের পথে যাত্রা। বঙ্গোপসাগরের নীল জলরাশি, হালকা ঢেউ আর দূরে ধূসর হয়ে যাওয়া পাহাড়ের দৃশ্য আমাদের মোহিত করে তোলে। প্রায় আড়াই ঘণ্টার সমুদ্রযাত্রা শেষে আমরা সেন্টমার্টিনে পৌঁছাই।

পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে মন ভরে যায়। চারদিকে সবুজ ও নীলের সমারোহ, স্বচ্ছ পানির নিচে দেখা যায় প্রবাল, কাঁকড়া আর ছোট মাছেরা। দ্বীপের প্রধান বাজার এলাকা ছাড়িয়ে আমরা হেঁটে চলে যাই পশ্চিম পাশের “ছেঁড়াদ্বীপ” পর্যন্ত। পথে পথে নারকেল গাছ, ছোট ছোট কুটির, আর বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে গল্প আর হাসির মধ্যে সময় কেটে যায়।

ছেঁড়াদ্বীপে সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিল, পৃথিবীর আর কোথাও এমন দৃশ্য নেই। সূর্যের কমলা আলো যখন নীল সমুদ্রজলকে রাঙিয়ে দেয়, তখন চারপাশ নীরব হয়ে যায়। আমরা চুপচাপ দাঁড়িয়ে প্রকৃতির এই দৃশ্য উপভোগ করি।

রাতে হোটেলে ফিরে মাছ ও সামুদ্রিক খাবার দিয়ে বিশেষ এক ভোজন আয়োজন করেছিলাম। এখানকার রূপচাঁদা, লইট্টা, কাঁকড়া—সবই একেবারে টাটকা আর সুস্বাদু।

পরদিন সকালে সূর্যোদয় দেখতে সৈকতে যাই। ঠান্ডা বাতাস আর সমুদ্রের গর্জন মিলিয়ে এক দুর্দান্ত অনুভূতি তৈরি হয়। কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটির পর আমরা স্থানীয় বাজার ঘুরে দেখি। সেখান থেকে ঝিনুক, প্রবালের তৈরি নানা জিনিস সংগ্রহ করি।

এই ভ্রমণ শুধু প্রকৃতি দেখার নয়, বরং আত্মার প্রশান্তি খোঁজারও এক অভিজ্ঞতা। সেন্টমার্টিনের মানুষজন সরল, অতিথিপরায়ণ এবং বন্ধুবান্ধব। দ্বীপটি আমাদের বুঝিয়ে দেয়, প্রকৃতি যদি অপরূপ হয়, তবে জীবনও হতে পারে শান্তিময়।

সেন্টমার্টিন ভ্রমণ আমার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় অভিজ্ঞতা। এই স্বর্গীয় দ্বীপের সৌন্দর্য ও প্রশান্তি আজও চোখে ভাসে। ভবিষ্যতে আবার ফিরে যাওয়ার ইচ্ছে রইল, নতুন কিছু দেখার আশায়।

সম্পর্কিত খবর :

;