Search

Search

এক্সক্লুসিভ ব্রেকিং নিউজ পেতে আপনার মোবাইল নম্বরটি দিন

চিন্তা করবেন না, আমরা স্প্যাম করি না!

হোয়াইট হাউজে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ নিয়ে বৈঠক: ফোর্ডো স্থাপনায় ‘বাঙ্কার ব্লাস্টার’ হামলার পরিকল্পনা

যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউজে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার সময় ইরানের ফোর্ডো পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা উঠে এসেছে। আলোচনায় বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে ‘বাঙ্কার ব্লাস্টার’ নামক শক্তিশালী বোমা ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা।স্বভাবতই কৌতুহলি মানুষের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, বিশ্বজুড়ে আলোচিত এই বোমা আসলে কী? কেন এটি ব্যবহার করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে? ইরানের ফোর্ডো স্থাপনাটি কেন টার্গেট?

যে কারণে ফোর্ডো গুরুত্বপূর্ণ

ইরানের কুম শহরের কাছে অবস্থিত ফোর্ডো পারমাণবিক স্থাপনাটি ইরানের অন্যতম নিরাপদ এবং গোপন পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এটি পাহাড়ের গভীরে, মাটির প্রায় ৮০-৯০ মিটার নিচে নির্মিত, যাতে যেকোনো সাধারণ বিমান হামলা বা ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতেও সুরক্ষিত থাকে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের শঙ্কা—এই কেন্দ্রটিতেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাধ্যমে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে এগোচ্ছে।

‘বাঙ্কার ব্লাস্টার’ কী?

‘বাঙ্কার ব্লাস্টার’ বা ‘Bunker Buster’ হলো এক ধরনের বোমা যা মাটির অনেক গভীরে প্রবেশ করে বিস্ফোরিত হওয়ার ক্ষমতা রাখে। এটি বিশেষভাবে নির্মিত শক্ত গঠনের ঘাঁটি, কমান্ড সেন্টার বা পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংস করার জন্য ব্যবহার করা হয়।

সবচেয়ে পরিচিত ‘বাঙ্কার ব্লাস্টার’ বোমাগুলোর মধ্যে রয়েছে GBU-28 ও GBU-57A/B Massive Ordnance Penetrator (MOP)।

বিশেষভাবে GBU-57A/B MOP বোমাটি প্রায় ৩০,০০০ পাউন্ড ওজনের এবং এটি প্রায় ২০০ ফুট গভীর পর্যন্ত ভূগর্ভস্থ লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাতে সক্ষম। এই বোমাগুলো সাধারণত B-2 Stealth Bomber এর মতো স্টেলথ প্রযুক্তির বিমান দ্বারা বহন করা হয়, যাতে রাডারে ধরা না পড়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে আঘাত হানা যায়।

কেন এই হামলার পরিকল্পনা?

হোয়াইট হাউজের বৈঠকে পেন্টাগনের শীর্ষ কর্মকর্তারা ইসরায়েলের সঙ্গে সমন্বয় করে এমন একটি পরিকল্পনার খসড়া তৈরি করেছেন বলে জানা গেছে, যাতে প্রয়োজনে ফোর্ডোর মতো গোপন স্থাপনাগুলোতে ‘বাঙ্কার ব্লাস্টার’ ব্যবহার করে তা অকার্যকর করে দেওয়া যায়। কেননা পাহাড় ও শক্ত কংক্রিট স্থাপনা ভেদ করে মাটির গভীরে পৌঁছার মত বোমা ইসরাইলের হাতে নেই।বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান যদি তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বাড়ায় অথবা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে দৃশ্যমান অগ্রগতি করে, তখন এই ধরনের হামলার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যাবে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগ

এ ধরনের হামলা শুধু ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কাকেই উসকে দেয় না, বরং গোটা মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়িয়ে দেয়। তেল সরবরাহে বিঘ্ন, মানবিক সংকট, এবং বিশ্ব রাজনীতিতে বড় ধরণের অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে।

জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়কে সংযম প্রদর্শন ও কূটনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।

ইরান-ইসরায়েল সম্পর্কের জটিল প্রেক্ষাপটে ‘বাঙ্কার ব্লাস্টার’ হামলার পরিকল্পনা শুধুমাত্র একটি সামরিক কৌশল নয়—এটি এক ভয়াবহ বার্তা, যা পরমাণু অস্ত্র প্রতিরোধের আড়ালে এক বিশাল যুদ্ধের ইঙ্গিতও বহন করে।


সম্পর্কিত খবর :

;