Search

Search

এক্সক্লুসিভ ব্রেকিং নিউজ পেতে আপনার মোবাইল নম্বরটি দিন

চিন্তা করবেন না, আমরা স্প্যাম করি না!

তীব্র গরমেও দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর কুমিল্লার শালবন বিহার

ঈদুল আজহার ছুটিতে প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে হাজারো মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন কুমিল্লার বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র শালবন বিহারে। প্রখর রোদ উপেক্ষা করেও ভ্রমণপিপাসুদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে এ ঐতিহাসিক স্থানটি।

কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় অবস্থিত শালবন বিহার বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার। খ্রিষ্টীয় অষ্টম থেকে নবম শতকে নির্মিত এ নিদর্শন ইতিহাসপ্রেমী দর্শনার্থীদের জন্য বরাবরই এক আকর্ষণীয় গন্তব্য। ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে এখানে বেড়াতে আসা মানুষদের মধ্যে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে এসেছেন। কেউ এসেছেন বন্ধুদের সঙ্গে, কেউবা আবার ভ্রমণপ্রেমী সংগঠনের সদস্য হয়ে।

ঢাকার ধানমণ্ডি থেকে বেড়াতে আসা কলেজ শিক্ষার্থী আফরোজা সুমি বলেন, “অনেকদিন ধরেই শালবন বিহারে আসার ইচ্ছে ছিল। ঈদের ছুটি আর বন্ধুদের উৎসাহে এবার চলে আসা। গরমটা একটু বেশি হলেও সবুজ আর শান্ত পরিবেশে ঘুরে মনটা ভালো হয়ে গেল।”

বিহার চত্বরের পাশেই আছে ময়নামতি জাদুঘর, যেখানে প্রদর্শিত হচ্ছে খননকৃত স্থাপনাগুলোর নানা ধ্বংসাবশেষ, মূর্তি, টেরাকোটার ফলক ও নানান প্রাচীন নিদর্শন। দর্শনার্থীরা ইতিহাস জানতে ও ছবি তুলতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন সেখানে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও পর্যটকদের এই উপস্থিতিতে খুশি। শালবন বিহারের প্রবেশপথের আশপাশে অস্থায়ী দোকান বসেছে, যেখানে বিক্রি হচ্ছে ঠান্ডা পানীয়, ঝালমুড়ি, চটপটি, খেলনা ও হস্তশিল্পজাত সামগ্রী। ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “ঈদের পর এখানে লোকজন বাড়ে। বিক্রিও ভালো হয়। গরমের কারণে ঠান্ডা পানীয় বেশি বিক্রি হচ্ছে।”

তবে চরম তাপদাহ ও পর্যাপ্ত ছায়ার অভাব কিছুটা ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে পর্যটকদের জন্য। কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, বিশ্রামের জন্য ছায়াযুক্ত বসার স্থান ও পানির ব্যবস্থা আরও উন্নত হওয়া দরকার। ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাজীব হাসান বলেন, “পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে শালবন বিহার অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবে গরমে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার মতো ভালো জায়গা না থাকায় একটু কষ্ট হচ্ছে।”

পর্যটকদের নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার বিষয়টি তদারকি করছে ক্যান্টনমেন্ট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন। টিকিট কেটে প্রবেশের সময় পর্যটকদের ভেতরে পানি ও খাবার নেওয়ার নিয়ম মেনে চলতে বলা হচ্ছে।

তীব্র গরমেও ঈদের ছুটি ঘিরে মানুষজনের শালবন বিহারে ভিড় প্রমাণ করে—প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রতি মানুষের আগ্রহ কখনোই কমে না। একটু যত্ন, কিছু উন্নয়ন ও পরিচর্যা পেলে শালবন বিহার হয়ে উঠতে পারে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার পর্যটনের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু।

সম্পর্কিত খবর :

;