স্থান ও ঋতুভেদে সাজ-পোশাকের তারতম্য

সাজ ছাড়া নারী যেনো অসম্পূর্ণ। সাজতে ভালোবাসে না এমন নারী খুঁজে পাওয়া কঠিন। প্রতিটা নারীই চায় সাজ ও পোশাকে তাকে নজরকাড়া লাগুক। মানুষের পোশাক ও সাজ শুধু ব্যক্তিগত রুচির প্রকাশ নয়, বরং তাতে স্থান, কাল, সংস্কৃতি ও পরিবেশের প্রতিফলনও ঘটে। একেক জায়গায় একেক রকম সাজের প্রচলন দেখা যায়। সাজের এই ভিন্নতা আসে স্থান ও ঋতুভেদে।
স্থানভেদে সাজ
কর্মস্থান বা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাঁকজমক সাজ বেমানান। এসব জায়গায় হালকা সাজেই সুন্দর লাগে। মুখে ময়েশ্চারাইজার আর হালকা ফেইস পাউডার, চোখে কাজল, সাথে ঠোঁটে হালকা রঙের লিপস্টিকই যথেষ্ট। পরার জন্য সুতির শাড়ি বা কুর্তি আরামদায়ক হবে।
আবার দাওয়াতে পরা যেতে পারে কারচুপির সালোয়ার কামিজ বা হাফ সিল্কের শাড়ি। করা যেতে পারে হালকা মেকআপ। বিয়ে বা কোনো পার্টির জন্য গর্জিয়াস লুকই উপযোগী।
জামদানি বা কাতান শাড়ি, অথবা শাড়ির পরিবর্তে লেহেঙ্গাও বিয়ের অনুষ্ঠানে পরার জন্য উপযোগী। পোশাকের সাথে মিল রেখে সুন্দর করে চোখ সাজানো যেতে পারে। শাড়ির সাথে খোঁপা করে বেলি বা গোলাপ ফুল গুঁজে নিলে তা নজর কাড়বে সবার।
বর্তমানে নারীদের পছন্দের তালিকায় একটি বড় অংশজুড়ে রয়েছে ওয়েস্টার্ন পোশাক। বন্ধুদের সাথে হ্যাংআউট, পিকনিক, ফরমাল কিংবা ক্যাজুয়াল ডিনারে প্রাধান্য পাচ্ছে ওয়েস্টার্ন পোশাক।
ঋতুভেদে সাজবাংলা বছরের ছয়টি ঋতুর সৌন্দর্যের সাথে মিলিয়ে আমাদের সাজেও আসে রঙ ও উপাদানের বৈচিত্র্য। ঋতুর সাথে সাজের বিষয়টি আরাম ও প্রয়োজনের সাথেও ওতোপ্রোতভাবে জড়িত।
গ্রীষ্মকাল
অতিরিক্ত গরমের কারণে এই সময় সাজে প্রাধান্য পায় হালকা সাজ ও পোশাক। ফিকে বা ঠাণ্ডা রঙের সুতি বা লিলেন কাপড়ের কুর্তি, টপস, সালোয়ার কামিজ বা শাড়ি রাখা হয় পছন্দের শীর্ষে। গরমে ঢিলেঢালা পোশাকে আরাম মেলে বেশি। সাজের ক্ষেত্রে সানস্ক্রিন, হালকা পাউডার ও ম্যাট লিপস্টিক উপযোগী। অতিরিক্ত ভারী মেকআপ এড়িয়ে চলাই ভালো।
বর্ষাকাল
বর্ষায় যখন তখন বৃষ্টি নামার কারণে ভিজে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে বেশি। তাই গাঢ় রঙের সিনথেটিক বা রেয়নের কুর্তি, টপস বা সালোয়ার কামিজ এই সময়ে পরার জন্য উপযোগী। সাজের জন্য ওয়াটারপ্রুফ মেকআপ ব্যবহার করা ভালো।
শরৎকাল
এই সময় আকাশ পরিষ্কার থাকে, সাথে হালকা বাতাস। তাই সাজ ও পোশাকেও প্রশান্তির ছাপ দেখা দেয়। হালকা বা গাঢ় যেকোনো রঙের সুতি, মসলিন, লিলেন বা সিল্কের কাপড় পরা যায়। সাজে ন্যাচারাল লুক রাখাই মানানসই।
হেমন্তকাল
হেমন্তকালেই শীতের হালকা আমেজ চলে আসায় মোটা সুতি কাপড় বা উলের হালকা পোশাক পরা যেতে পারে। গাঢ় রং এসময়ের জন্য অধিক উপযোগী। একটু গাঢ় টোনের লিপস্টিকের সাথে হালকা আইশ্যাডো বেশ মানিয়ে যায়।
শীতকাল
শীত মানেই ফ্যাশনের জমকালো উৎসব। বিভিন্ন উৎসবে করা হয় ভারী মেকআপ। কনকনে ঠাণ্ডার সাথে তাল মিলিয়ে পরা হয় উলের সোয়েটার, শাল, টুপি, মাফলার অথবা লেদারের ব্লেজার, জ্যাকেট ইত্যাদি। এ সময় নেভি ব্লু, মেরুন, ডার্ক গ্রের মতো গাঢ় রঙেই বেশ সুন্দর দেখায়।
বসন্তকাল
রঙ ও প্রাণচাঞ্চল্যের ঋতু বসন্তকাল ফ্যাশনেও আনে বৈচিত্র্য ও উজ্জ্বলতা। বাসন্তী, হলুদ, কমলা বা উজ্জল সবুজের মতো রঙিন শাড়ি-কাপড়ে ফুটে ওঠে সৌন্দর্য। সাথে উজ্জল চোখের সাজ ও হালকা গ্লসি লিপস্টিক। কাঁচের চুড়ির সাথে বিভিন্ন রঙিন ফুলের গয়না নারীর সাজে যোগ করে ভিন্ন মাত্রা।
প্রতিটি ঋতুই নারীর সাজ-পোশাকে আনে ভিন্নতা। স্থান ও ঋতুভেদে সাজ, পোশাক নির্বাচন করতে পারাও মানুষের রুচি ও নান্দনিকতার সূক্ষ্ম প্রকাশ।