গাজায় ত্রাণ কেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩১ ফিলিস্তিনি

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৩১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। ১ জুন ভোরে রাফাহ শহরের পশ্চিম পাশে এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা।
স্থানীয় সাংবাদিক ও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হাজার হাজার ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনি যখন মানবিক সহায়তা সংগ্রহে জড়ো হন, তখন ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক ও ড্রোন থেকে আকস্মিকভাবে গোলাবর্ষণ শুরু হয়। এসময় বেশ কিছু মানুষ হতাহত হয়। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। আহতদের বেশিরভাগকেই খান ইউনুসের একটি অস্থায়ী হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, যা বর্তমানে সীমিত পরিসরে চালু আছে।
ত্রাণ সংগ্রহকারীদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার প্রত্যক্ষদর্শী ইব্রাহিম আবু সাউদ জানিয়েছেন, ইসরায়েল-সমর্থিত ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের দিকে এগিয়ে যাওয়া মানুষদের ওপর সরাসরি গুলি চালায় ইসরায়েলি সেনারা।
৪০ বছর বয়সী আবু সাউদ যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) বার্তা সংস্থাকে বলেন, “অনেক শহীদ হয়েছে, তাদের মধ্যে নারীও ছিল।” তিনি আরও জানান, তারা ইসরায়েলি সামরিক অবস্থান থেকে প্রায় ৩০০ মিটার দূরে ছিলেন।
আবু সাউদ বলেন, “আমি নিজের চোখে অনেক মানুষকে গুলিবিদ্ধ হতে দেখেছি। এক তরুণকে দেখেছি, যে ঘটনাস্থলেই মারা গিয়েছিল।” শোকাহত কণ্ঠে তিনি বলেন, “আমরা তাকে সাহায্য করতে পারিনি।”
মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এ ধরনের হামলা যুদ্ধাপরাধের শামিল।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে তারা দাবি করেছে, রাফাহ অঞ্চলে হামাসের অবস্থান লক্ষ্য করে ‘সুনির্দিষ্ট সামরিক অভিযান’ চালানো হয়েছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিক চাপ আরও জোরালো হয়েছে। জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপকে অবিলম্বে থামানোর আহ্বান জানিয়েছে।