মাইক্রোসফটে ছাঁটাই: বিশ্বজুড়ে চাকরি হারাচ্ছেন প্রায় ৬ হাজার কর্মী

বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট তাদের বৈশ্বিক কর্মী বাহিনীর প্রায় ৩ শতাংশ ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রায় ৬ হাজার কর্মী চাকরি হারাতে যাচ্ছেন। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অপারেশনাল খরচ কমানো এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর অংশ হিসেবেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। খবর টেক ক্রাঞ্চের।
খবরে বলা হয়, মাইক্রোসফটের এই ছাঁটাই মূলত ব্যবস্থাপনাগত স্তরের ওপর প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে লিংকডইন, এক্সবক্স এবং অন্যান্য কিছু বিভাগে কর্মরত অনেক ম্যানেজমেন্ট পর্যায়ের কর্মকর্তা এই ছাঁটাইয়ের আওতায় পড়বেন। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, কর্মসংস্থানের স্তর হ্রাস এবং পরিচালন কাঠামোকে আরও কার্যকর করাই এ সিদ্ধান্তের মূল লক্ষ্য।
এরইমধ্যে ওয়াশিংটনের প্রায় ২,০০০ কর্মী এই ছাঁটাইয়ের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে অনেকেই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এবং প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট বিভাগে কাজ করতেন। মাইক্রোসফটের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, এটি একটি ‘স্ট্র্যাটেজিক রিয়ালাইনমেন্ট’ এবং প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘমেয়াদী প্রবৃদ্ধির জন্য সম্পদ পুনর্বিন্যাস করছে।
আরও জানানো হয়েছে, গত প্রান্তিকে ৭০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রাজস্ব অর্জনের পরেও প্রতিষ্ঠানটি ঘোষণা করেছে, ২০২৫ অর্থবছরে তাদের মূল লক্ষ্য হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি। আগামী অর্থবছরে মাইক্রোসফটের পুঁজিগত ব্যয় ৮০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মাইক্রোসফটের এই ছাঁটাই ঘোষণার পর শেয়ারবাজারে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দামে প্রভাব পড়েছে। শেয়ারমূল্য কিছুটা কমে গেছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি এখনও মার্কিন শেয়ারবাজারে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে এবং বর্তমানে তাদের বাজারমূল্য প্রায় ২.৭৯ ট্রিলিয়ন ডলার।
বিভিন্ন প্রযুক্তি বিশ্লেষক মনে করছেন, প্রযুক্তি খাতে চলমান পুনর্গঠন ও এআই-ভিত্তিক রূপান্তরের ধারা মাইক্রোসফটের এই সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছে। মাইক্রোসফট ছাড়াও অন্যান্য প্রযুক্তি জায়ান্ট যেমন গুগল, মেটা এবং অ্যামাজন সম্প্রতি তাদের কর্মী সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই ছাঁটাইয়ের ফলে প্রযুক্তি জগতে পুনর্গঠনের একটি নতুন ধারা স্পষ্ট হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।