Search

Search

এক্সক্লুসিভ ব্রেকিং নিউজ পেতে আপনার মোবাইল নম্বরটি দিন

চিন্তা করবেন না, আমরা স্প্যাম করি না!

একটি সুন্দর জীবনে বাগানের প্রয়োজনীয়তা

বাগান করা মানুষের জ্ঞানের কার্যকারিতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি ডিমেনশিয়ার (একটি মানসিক রোগ যাতে ব্যক্তির বুদ্ধি, স্মৃতি ও ব্যক্তিত্ব লোপ পায়। মূলত প্রবীণ ব্যক্তিরাই এ রোগে ভোগেন) ঝুঁকি হ্রাস করে। এটি নরওয়ের ডিমেনশিয়া আক্রান্ত মারিয়ানা রোগস্ট্যাডের জীবনে এই সত্যটি প্রতিফলিত হয়েছে। হোটেল কেরানি হিসেবে দীর্ঘ কর্মজীবন শেষে তিনি দেশে ফিরে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হন এবং একঘেয়েমির শিকার হন। তবে "কেয়ার ফার্ম" ইন পা টুনেটে যোগ দিয়ে তিনি পুনরায় সামাজিক ও মানসিকভাবে সক্রিয় হন।

এই ধরনের কেয়ার ফার্ম প্রকৃতিভিত্তিক সেবার একটি উদাহরণ, যেখানে কাজের মাধ্যমে সামাজিক সংযোগ এবং মানসিক উদ্দীপনা তৈরি হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, বাগান করা নিউরোট্রফিক ফ্যাক্টর (BDNF) ও ভাস্কুলার এন্ডোথেলিয়াল গ্রোথ ফ্যাক্টর (VEGF)-এর মাত্রা বাড়ায়, যা নিউরনের বিকাশে সহায়ক। এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, যারা জীবনে নিয়মিত বাগান করেছেন, তাদের বুদ্ধিমত্তা ও স্মৃতিশক্তি অনেক বেশি কার্যকর থেকেছে।

নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা যায়, প্রতিদিন বাগানকারীদের ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি ৩৬% কম। শুধু প্রকৃতির সংস্পর্শেও মানসিক চাপ কমে, মনোযোগ ও আবেগ নিয়ন্ত্রণে থাকে। গবেষক মেলিসা লেমের মতে, প্রকৃতিভিত্তিক প্রেসক্রিপশন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, ডায়াবেটিস রোধ এবং স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে সহায়তা করে। এসবকিছুই ডিমেনশিয়া প্রতিরোধে সহায়ক। অতএব, বাগান করা শুধু অবসর কাটানোর পন্থা নয়, এটি স্বাস্থ্য ও মানসিক সুস্থতার এক কার্যকর হাতিয়ার।

প্রকৃতি আমাদের শরীর ও মনের সুস্থতার সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত—এমনটাই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

গবেষক লেম বলেন, প্রকৃতির উপাদান—চিত্র, শব্দ, গন্ধ—স্বাস্থ্য উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখে। কানাডায় তিনি একটি প্রকৃতির প্রেসক্রিপশন প্রোগ্রাম চালু করেছেন, যা প্রমাণ করে প্রকৃতির সংস্পর্শে আসা চাপ কমানোর পাশাপাশি মনোযোগ বৃদ্ধিতেও সহায়ক। মনোযোগ পুনরুদ্ধার তত্ত্ব অনুসারে, প্রকৃতি শহুরে জীবনের মানসিক চাপ কমিয়ে মস্তিষ্ককে পুনরুজ্জীবিত করে।

বাগান করাও এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ। দুটি মার্কিন গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত বাগান করলে হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস পায় এবং হাড়ের ঘনত্ব বাড়ে। এটি শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকার মাধ্যমে পেশী শক্তি ও সহনশীলতা উন্নত করতে সাহায্য করে।

ডিমেনশিয়া আক্রান্তদের জন্যও এই সুবিধাগুলি বিশেষ উপকারি। ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যে গড়ে ওঠা কেয়ার ফার্মগুলোতে বাগান করার মাধ্যমে তারা নতুনভাবে সংযুক্তি, আনন্দ এবং স্বাধীনতা অনুভব করতে পারেন। ব্রিংজজর্ড বলেন, কাজের ফল নিজের চোখে দেখা ও অন্যদের দেখে শেখার মাধ্যমে তারা নিজেদের আত্মবিশ্বাস ফিরে পান। যেমন রোগস্ট্যাড, যিনি এখন সপ্তাহে তিন দিন কেয়ার ফার্মে কাজ করেন। তিনি বলেন, “প্রকৃতিতে থাকা ভালো। ঘরে বসে থাকার চেয়ে এটা অনেক ভালো।”

সম্পর্কিত খবর :

;