কোষ্ঠকাঠিন্যের ঘরোয়া সমাধান

ঘরে বসেই কিছু সহজ উপায়ে আপনি কোষ্ঠকাঠিন্যের দ্রুত সমাধান পেতে পারেন। রিডার্স ডাইজেস্ট অবলম্বনে নিচে কিছু কার্যকর সমাধান দেওয়া হলো—
তিলের বীজ (Sesame Seeds)
আন্তর্জাতিক গবেষণা জার্নাল International Journal for Research in Applied Science and Engineering Technology–এ প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, তিলের বীজ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার একটি দারুণ উপায়। এতে থাকা প্রাকৃতিক তেল অন্ত্রকে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে, যা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমায়। আপনি তিলের বীজ সরাসরি বা সালাদে মিশিয়ে খেতে পারেন, কিংবা কফি গ্রাইন্ডারে গুঁড়ো করে মসলা হিসেবে খাবারে ব্যবহার করতে পারেন।
গুড় (Molasses)
এক চামচ ব্ল্যাকস্ট্র্যাপ গুড় রাতে ঘুমানোর আগে খেলে অনেক সময় সকালেই উপশম মেলে। ২০১৯ সালে Journal of Ethnopharmacology–এ প্রকাশিত এক গবেষণায় শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্যের ঘরোয়া চিকিৎসা হিসেবে এর কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে।
আঁশজাতীয় খাবার (Fibre)
আঁশজাতীয় খাবার হলো প্রাকৃতিক পেট পরিস্কারক, যা পরিপাকতন্ত্র থেকে খাবার ও বর্জ্য অপসারণে সহায়তা করে। Mayo Clinic অনুযায়ী, প্রতিদিন ২০ থেকে ৩৫ গ্রাম আঁশজাতীয় খাবার গ্রহণ করা উচিত। ব্রান সিরিয়াল, বিনস, মসুর ডাল, ওটস, বাদাম, যব, নানা ধরনের শাকসবজি ও ফল– এসব আঁশসমৃদ্ধ খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পারে। তবে বাড়তি আঁশ খাওয়ার পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পান করাও জরুরি, যাতে মল নরম থাকে এবং সহজে বের হয়।
পুদিনা ও আদা (Mint and Ginger)
পুদিনা ও আদা—দুইই প্রমাণিত ঘরোয়া প্রতিকার। পুদিনার মধ্যে থাকা মেনথল অন্ত্রের পেশি শিথিল করে, যা পরিপাকক্রিয়া সহজ করে। আদা শরীরের অভ্যন্তরে উত্তাপ সৃষ্টি করে, যা ধীর গতির হজম প্রক্রিয়া সক্রিয় করে তোলে। Heart MD Institute-এর ড. স্টিফেন সিনাত্রা পরামর্শ দেন, আদা চায়ের মাধ্যমে গ্রহণ করতে। গরম পানি নিজেই হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে।
লেবুর পানি (Lemon Water)
লেবুর রসে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড হজমতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে এবং শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস পানিতে টাটকা লেবুর রস মিশিয়ে খান, অথবা চায়ে লেবু যোগ করুন। লেবুর টক স্বাদ আপনাকে আরও পানি খাওয়াতে উৎসাহিত করবে, যা দীর্ঘমেয়াদে হজম প্রক্রিয়া উন্নত করবে। American Cancer Society–এর মতে, উষ্ণ বা গরম পানিও কোষ্ঠকাঠিন্য উপশমে কার্যকর হতে পারে।
আপনার পেটের সমস্যার জন্য এসব প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া সমাধানগুলো চেষ্টা করে দেখতে পারেন। তবে দীর্ঘস্থায়ী বা জটিল সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।