ইসরায়েলের পক্ষে দাঁড়ালে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য-ফ্রান্সের ঘাঁটিতে হামলা, হুঁশিয়ারি ইরানের

ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে যদি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য বা ফ্রান্স কোনো সামরিক সহায়তা দেয়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে ওইসব দেশের সামরিক ঘাঁটি ও নৌবহর ইরানের হামলার লক্ষ্যবস্তু হবে। ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সামরিক উত্তেজনার মধ্যেই এমন কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ও বার্তা সংস্থা মেহর নিউজের খবরে বলা হয়, শুক্রবার রাতে ইরানি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “যেসব দেশ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের বৈধ প্রতিক্রিয়া প্রতিহত করার চেষ্টা করবে, তাদের সামরিক ঘাঁটি, রণতরী ও কূটনৈতিক অবকাঠামো সরাসরি হামলার লক্ষ্যবস্তু হবে। পারস্য উপসাগর, লোহিত সাগর ও ওমান উপসাগরে মোতায়েন করা সব নৌযানও এই হুঁশিয়ারির আওতাভুক্ত।”
এই বিবৃতি সামনে আসার পর আন্তর্জাতিক কূটনীতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং সরাসরি কোনো সামরিক সংঘাতে জড়ায়নি। তবে ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে।
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে যখন ইসরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে এক হামলায় ইরানের পরমাণু ও সামরিক স্থাপনায় বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে বিপ্লবী গার্ডের প্রধানসহ একাধিক শীর্ষ কমান্ডার ও বিজ্ঞানী নিহত হয় বলে দাবি করেছে তেহরান। জবাবে ইরানও ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ III’-এর আওতায় ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি ও তেল আবিবে শতাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ইতোমধ্যে এক জরুরি বৈঠক করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য—তিন পশ্চিমা শক্তি ইরানকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানালেও, ইরান বলছে, তারা আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করছে মাত্র।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের এই হুঁশিয়ারি শুধু মধ্যপ্রাচ্যে নয়, বরং পুরো বিশ্ব নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে নতুন করে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে এটি বহুপক্ষীয় সংঘাতে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা।