শেখ হাসিনাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞপ্তি জারি

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আজ মঙ্গলবার (১৭ জুন) ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার এই সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেন, যা জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, অভিযুক্তরা আগামী সাত দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ না করলে তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচারকাজ চলবে।
অভিযোগ অনুযায়ী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকারের নির্দেশে চালানো হয় গুলি, ফলে প্রাণ হারায় প্রায় দেড় হাজার নিরস্ত্র ছাত্র ও সাধারণ মানুষ। এই ঘটনায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে অভিযুক্ত করে মামলা দাখিল করা হয়।
ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ সোমবার (১৬ জুন) এই মামলায় দুই পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে আগামী ২৪ জুন মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের ১ জুন ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আনীত পাঁচটি অভিযোগ আমলে নেয় এবং শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ছাড়াও প্রসিকিউটর আব্দুস সোবহান তরফদার ও মিজানুল ইসলাম অংশ নেন। আদালতে অভিযোগপত্র পাঠ করে শুনানো হয়, যা গণমাধ্যমেও সম্প্রচার করা হয়।
গত ১২ মে তদন্ত সংস্থা তাদের রিপোর্টে শেখ হাসিনাকে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার প্রধান নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করে। তার আগে, ১৮ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাল ২০ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিল।
এদিকে মামলার আরেক আসামি, সাবেক আইজিপি চৌধুরী মামুন ইতিমধ্যে আদালতে হাজির হয়েছেন। বর্তমানে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।
এই মামলার মাধ্যমে ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার ওপর বর্বর নির্যাতনের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলো বলে মনে করছেন মানবাধিকারকর্মীরা।