চতুর্থ দিনেও বন্ধ চক্ষু হাসপাতালের সেবা, দুর্ভোগে রোগীরা

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চতুর্থ দিনের মতো বন্ধ রয়েছে সব ধরনের চিকিৎসাসেবা। গত ২৫ মে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত চারজন রোগীর বিষপানের ঘটনায় উত্তেজনা তৈরি হয়, যার ধারাবাহিকতায় ২৭ মে একজন আহত রোগী পরিচালকের কক্ষে গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এরপর ২৮ মে রোগী, কর্মচারী ও স্বজনদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, যার পর থেকেই চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে।
আজ শনিবারও (৩১ মে) পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চিকিৎসক ও কর্মচারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাই চিকিৎসাসেবা চালু করা যাচ্ছে না। প্রতিদিন এই হাসপাতালে বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন গড়ে ১২০০ থেকে ১৫০০ রোগী। তাদের অনেকেই এখন চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
আজিমপুর থেকে আসা রোগী আজিজ মিয়া বলেন, "সরকারি হাসপাতালে চারদিন ধরে সেবা বন্ধ। সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে না কেন? সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?" শুধু তিনিই নন, শত শত রোগী আজ সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গত দুই দিনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা এবং ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে একাধিক বৈঠক হলেও কোনো কার্যকর সিদ্ধান্ত হয়নি। এক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হয়, হাসপাতালে ভর্তি থাকা ৮-১০ জন আহত জুলাই যোদ্ধাকে অন্যত্র স্থানান্তর করা হবে। তবে এখনো সে উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়নি।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. জানে আলম জানান, “নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসক ও কর্মীরা কাজে ফিরতে চাইছেন না। আমরা চেষ্টা করছি পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার, তবে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে সতর্ক রয়েছি।”
বর্তমানে হাসপাতালে প্রায় ৫০ জন জুলাই যোদ্ধা ভর্তি রয়েছেন। আত্মহত্যার চেষ্টা করা চারজন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং একজন সিএমএইচে চিকিৎসাধীন। এ ছাড়া নিরাপত্তাহীনতায় প্রায় ১৫০ জন সাধারণ রোগী হাসপাতাল ছেড়েছেন।
চিকিৎসাসেবা বন্ধ থাকায় রোগীরা যেমন চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন, তেমনি স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপরও চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হলে সাধারণ রোগীদের দুর্ভোগ আরও বাড়বে।