জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে ঐক্যকমিশনকে সফল করতে হবে : সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া বলেছেন, একাত্তরে আমরা স্বাধীন হয়েছি, আর আগাস্টে আমরা মুক্তি পেয়েছি। আমাদের ছিলো শিকলপরা, সেই শিকলকে আমরা ভেঙেছি আগস্টে। আগে হৃদয়ের কথা কেউ মন খুলে বলতে পারেনি, এখন সবাই মন খুলে কথা বলে। আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাওয়ের কথা কেউ চিন্তাও করতে পরেনি। ঘেরাও করলেই লাশ। এখন যে কেউ যেকোনো ব্যাপারে প্রতিবাদ করতে পারেন। এটিই হচ্ছে স্বাধনীতা।
শনিবার দুপুরে মেহেরপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড কতৃক আয়োজিত চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর জেলার প্রবাসীদের মেধাবী সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি, প্রতিবন্ধী ভাতা এবং প্রবাসে মৃতের পরিবারকে আর্থিক অনুদান, বীমা সুবিধা ও মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, যে অধিকার আমরা পেয়েছি তা কখনও অবমূল্যায়ন করা যাবেনা। জাতি যখন শৃঙ্খল মুক্ত হয়। সতর্কভাবে তাদের শৃঙ্খলা ধরে রাখতে হয়। না হলে কঠিন বিপদের দিকে ধাবিত হতে হয়। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হলে, যে ঐক্য কমিশন গঠন করা হয়েছে সেটিকে সফল করতে হবে।
একই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার বলেন, বৈদেশিক মূদ্রা ছাড়া একটি দেশ চলতে পারো না। সেই জন্য প্রয়োজন হয় ডলারের। আমাদের দুটিখাত থেকে ডলার আসে। একটি গার্মেন্টস সেক্টর আর বাকিটা প্রবাসীদের কাছ থেকে। আমাদের দেশে গার্মেন্টস সেক্টর থেকে ৩৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি হয়। প্রবাসীদের কাছ থেকে আসে ২৫ থেকে ২৬ বিলিয়ন ডলার। তাই মনে হতে পারে গার্মেন্টস থেকেই বেশি পরিমান ডলার আয় হয়। আসলে গার্মেন্টস সেক্টর রপ্তানির মাধ্যমে যে আয় তার মধ্যে ৩২ বিলিয়ন ডলার আমদানি করতে হয়। তাই এখানে প্রবাসীদের আয়ের অবদান অর্থনীতিতে অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, এত সফলতার পরও আমরা বিদেশে দক্ষ জনবল পাঠাতে পারছিনা। বিশ্বের অন্যান্য দেশ দক্ষ প্রবাসীদের মাধ্যমে যা আয় করেন তার তুলনায় আমাদের আয় খুবই সীমিত। আমরা যদি সাধারণ মানুষকে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে বিদেশে পাঠাতে পারি তাহলেই সফল হবো।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, খুলনা বিভাগী কমিশনার ফিরোজ সরকার, মেহেরপুর জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ, পুলিশ সুপার মাকসুদা আকতার খানম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক ব্যারিস্টার মো. গোলাম সরওয়ার ভূঁইয়া।
অনুষ্ঠান শেষে প্রবাসে থাকা পরিবারের ১৭ জন মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে ৪ লাখ ৯৩ হাজার, প্রতিবন্ধী সদস্যদের মাঝে ১২ হাজার, বিদেশ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ ১৪ টি পরিবারের মাঝে ৪২ লাখ, প্রবাসে মৃত্যুজনিত বীমা দাবিদার ৭টি পরিবারের মাঝে ৫২ লাখ, ৬ মাসের মধ্যে ফেরত আসা ৮ টি পরিবারের মাঝে ৪ লাখ, মত্যুজনিত ক্ষতিপূরণে একটি পারবারের মাঝে ৯০ লাখসহ মোট এক কোটি ৯৩ লাখ টাকার চেক বিতরণ করেন প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিবৃন্দ।