চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার জট কমানোর উদ্যোগ

পণ্য জট নিরসন ও খালাস প্রক্রিয়া সহজ করতে "চট্টগ্রাম বন্দরে দ্রুত নিলাম, বিলিবন্দেজ ও ধ্বংস কার্যক্রম সংক্রান্ত বিশেষ আদেশ, ২০২৫" জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। দ্রুত পণ্য খালাস, শ্রম, অর্থ ও কর্মঘণ্টা সাশ্রয়, রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় রোধ, নিরাপত্তা ঝুঁকি নিরসন, ভৌত অবকাঠামো, জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং কন্টেইনার জট হ্রাসসহ বন্দরের সামগ্রিক সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গতকাল এ আদেশ জারি করা হয়।

এতে উল্লেখ করা হয়, ১ জানুয়ারি ২০১৩ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত অখালাসকৃত কন্টেইনার জট বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করছে। দীর্ঘদিনের পুরোনো কেমিক্যাল ও বিপজ্জনক পণ্য বিস্ফোরণ ঝুঁকিসহ বন্দরের সামগ্রিক নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করেছে। উক্ত ঝুঁকি নিরসনে বিদ্যমান প্রমিত (Standard) নিলাম প্রক্রিয়ায় সময়ক্ষেপণ এড়ানো সম্ভব হয় না। শর্তযুক্ত বা নিয়ন্ত্রিত পণ্য খালাসে জটিলতা, অনিষ্পন্ন মামলা, নিলামের দরদাতা কর্তৃক পণ্য খালাস না করা, লজিস্টিকসের অভাবসহ নানাবিধ কারণে কর্তৃপক্ষ স্বল্পতম সময়ে নিলাম প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারছে না।

এ অবস্থায় ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ সাল পর্যন্ত নিলাম ও নিষ্পত্তিযোগ্য পণ্যের (যানবাহন ব্যতীত) বিক্রয়, ব্যবস্থাপনা ও ধ্বংস কার্যক্রম প্রক্রিয়া সহজ করতে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, নিষ্পত্তিযোগ্য পণ্যসমূহের সংরক্ষিত মূল্য নির্ধারণ ব্যতীত প্রথম নিলামে (বিশেষ ক্ষেত্র ব্যতীত) প্রাপ্ত সর্বোচ্চ মূল্যে বিক্রয় করা যাবে; আমদানি নীতি বা রপ্তানি নীতি অনুযায়ী শর্তসাপেক্ষে, নিয়ন্ত্রিত বা নিষিদ্ধ অথবা পণ্যের গুনগতমান নষ্ট হওয়ার কারণে বা অন্য কোন কারণে নিলামের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা সম্ভব নয় অথবা সম্ভব হয় নাই তা ধ্বংস বা নিষ্ক্রিয়করণের লক্ষ্যে নিলাম ব্যতীত বিশেষায়িত সংস্থা বা প্রযুক্তিগত সক্ষমতা সম্পন্ন প্রতিষ্ঠানের নিকট বিনামূল্যে হস্তান্তর করা যাবে; দুইটি নিলামের মাধ্যমেও কোন পণ্য বিক্রয় করা সম্ভব না হলে অথবা দরপত্র পাওয়া না গেলে ৩য় নিলাম ব্যতিরেকে ব্যাপক প্রচার প্রচারণাপূর্বক পণ্য গ্রহণে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের নিকট সর্বোচ্চ প্রস্তাব মূল্যে বিক্রয এবং

পরীক্ষণ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ব্যবহার উপযোগিতা রয়েছে মর্মে প্রত্যয়নকৃত মেয়াদোত্তীর্ণ বিপজ্জনক পণ্য বা কেমিক্যাল জাতীয় পণ্যসমূহ প্রকৃত ব্যবহারকারী বা বিশেষায়িত সংস্থা বা প্রযুক্তিগত সক্ষমতা সম্পন্ন প্রতিষ্ঠানের নিকট সর্বোচ্চ অফার মূল্যে বিক্রয়ের বিধান রাখা হয়েছে।

নিলাম প্রক্রিয়া সহজ করতে দেওয়া এ আদেশ বাস্তবায়িত হলে বন্দরে দীর্ঘদিন পড়ে থাকা কন্টেইনার জট কমবে এবং বন্দরের কার্যক্রম নির্বিঘ্ন, সহজ, সময় সাশ্রয়ী, আমদানী-রপ্তানীকারকগণের খরচ কমাসহ সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আশা, এতে বন্দরের সুবিধাভোগীরা সুফল ভোগ করবে।